গোলাপ চাষ, গোলাপ গাছের পরিচর্যা ও যত্ন
- গোলাপ (Golap)
- গোলাপের শ্রেণীবিভাগ ( Golaper Prokarved)
- কালার বা রং অনুসারে গোলাপের জাত (Rong Onusare Golaper Jaat)
- গোলাপের ব্যাবহার (Golaper Babohar)
- বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে গোলাপ চাষ (Bangladeshe Golap Chas)
- টবে গোলাপ চাষের পদ্ধতি (Tobe Golap Chaser Poddhoti)
- গ্রীষ্মকালে গোলাপ গাছের পরিচর্যা (Grishmokale Golap Gachher Porichorja)
- বর্ষাকালে গোলাপ গাছের যত্ন (Borshakale Golap Gachher Jotno)
- জমিতে গোলাপ চাষ এর পদ্ধতি (Jomite Golap Chasher Poddhoti)
- গোলাপ গাছের পোকা-মাকড় দমনঃ (Poka-Makorh Domon)
- গোলাপ ফুলের ছবি (Golap Fuler Chhobi)
- উপসংহারঃ
- গোলাপ (Golap)
- গোলাপের শ্রেণীবিভাগ ( Golaper Prokarved)
- কালার বা রং অনুসারে গোলাপের জাত (Rong Onusare Golaper Jaat)
- গোলাপের ব্যাবহার (Golaper Babohar)
- বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে গোলাপ চাষ (Bangladeshe Golap Chas)
- টবে গোলাপ চাষের পদ্ধতি (Tobe Golap Chaser Poddhoti)
- গ্রীষ্মকালে গোলাপ গাছের পরিচর্যা (Grishmokale Golap Gachher Porichorja)
- বর্ষাকালে গোলাপ গাছের যত্ন (Borshakale Golap Gachher Jotno)
- জমিতে গোলাপ চাষ এর পদ্ধতি (Jomite Golap Chasher Poddhoti)
- গোলাপ গাছের পোকা-মাকড় দমনঃ (Poka-Makorh Domon)
- গোলাপ ফুলের ছবি (Golap Fuler Chhobi)
- উপসংহারঃ
গোলাপ (Golap)
‘গোলাপ‘ তার সৌন্দর্য ও সুঘ্রানের জন্য সর্ব যুগের সকল সমাজেই প্রশংসনীয়। আন্তর্জাতিক বাজারেও গোলাপের চাহিদা সবসময় প্রথম শ্রেণীতেই থাকে। আর তাই গোলাপ চাষাবাদের হার এবং চাহিদা বাংলাদেশে দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমানে গোলাপ বাণিজ্যিকভাবে রপ্তানি করেও বেশ মুনাফা অর্জিত হচ্ছে।
বাণিজ্যিকভাবে সাধারণত গোলাপের চারা, ফুল এবং গোলাপ ফুলের মালা বিক্রয় হয়ে থাকে। বাজারে লুজ ও কাট হিসেবে গোলাপ বেশি পাওয়া যায়।
“এই পোস্টটিতে আমরা বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে গোলাপ চাষাবাদ করার পদ্ধতি ও গোলাপ গাছের পরিচর্যা নিয়ে কথাবার্তা বলবো। এছাড়া কিভাবে গোলাপ গাছের গ্রোথ বৃদ্ধি করা যায় ও গোলাপগাছ গুলোকে সতেজ ও কীটপতঙ্গ মুক্ত রাখা যায় সে বিষয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ দিকনির্দেশনা দেওয়া থাকবে”
গোলাপের শ্রেণীবিভাগ ( Golaper Prokarved)
গোলাপকে নিম্নবর্ণিত বিভিন্ন শ্রেণিতে বিভক্ত করা হয়ে থাকে।
কালার / রং- লাল, হলুদ, কমলা, দ্বিরঙ্গা হয়ে থাকে।
সুগন্ধি: এভন, ব্লু পারফিউম, আইফেল টাওয়ার, ওকলাহোমা।
কালার / রং- সাদা, গোলাপী, ফিকে লাল, হলুদ, কমলা, দ্বিরঙ্গা হয়ে থাকে।
সুগন্ধি: এঞ্জেল ফেস, দিল্লী, প্রিন্সেস।
প্রধান জাত: অনজানী, রেশমি, নর্তকী, প্রীতি, স্বাতী।
কালার / রং- লাল, সাদা, গোলাপী, ফিকে লাল, হলুদ, কমলা, দ্বিরঙ্গা হয়ে থাকে।
কালার / রং– সাদা, গোলাপী, লাল, ও লেবু রঙা হয়ে থাকে।
এছাড়াও ডেভিড অস্টিন ও শ্রাব নামে গোলাপের আরো দুটি প্রজাতি রয়েছে।
কালার বা রং অনুসারে গোলাপের জাত (Rong Onusare Golaper Jaat)
গোলাপের ব্যাবহার (Golaper Babohar)
- শোভাবর্ধক গাছপালা হিসেবে বসত বাড়িতে সবথেকে বেশি ব্যবহৃত হয়।
- সুগন্ধি তৈরিতে গোলাপের ব্যবহার ব্যাপক আকারে লক্ষ্য করা যায়।
- বাণিজ্যিক ভাবে ফুল রপ্তানির জন্য ফুলের চাষ করা হয়ে থাকে।
- মাঝে মাঝে হেজিংএর উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
- ঢালু স্থানের স্থিতিশীলতার জন্যেও গোলাপ গাছ বেশ উপযোগী।
- খাদ্য এবং পানীয় তৈরিতেও গোলাপের ব্যবহার হয়ে থাকে। যেমনঃ জাম, জেলি, মারমেল্ড, বিভিন্ন ধরণের স্যুপ। এছাড়া গোলাপজল মধ্যপ্রাচ্য, পার্সিয়া এবং দক্ষিণ এশীয় খাবার গুলিতে বেশি ব্যাবহৃত হয়ে থাকে।
- গোলাপে প্রচুর পরিমান ভিটামিন সি থাকায় এটি বিভিন্ন ভেষজ ঔষধ হিসেবেও ব্যাবহার হয়ে থাকে।
বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে গোলাপ চাষ (Bangladeshe Golap Chas)
গোলাপ চাষের জন্য সর্বপ্রথম যে বিষয়টির উপর নজর দিতে হবে তা হলো জলবায়ু ও মাটি নির্বাচন। গোলাপ প্রধানত শীতকালের ফুল তবে গোলাপের কিছু শ্রেণী গরমের দিনেও ফুল দিয়ে থাকে। আবার কিছু কিছু গোলাপ অধিক তাপমাত্রায় ভালো হয়না।
বাংলাদেশের জন্য গোলাপ চাষের উপযোগী স্পেসিফিকেশন:
তাপমাত্রা: | ২০ – ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। |
আপেক্ষিক আদ্রতা: | ৮৫%। |
বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাত: | ১০০ – ১২৫। |
মাটি | উর্বর দোঁআশ। |
মাটির pH | ৬.০ – ৬.৫। |
সূর্যালোকের সময়: | বিকাল অপেক্ষা সকালের রোদ বেশি উপকারী। |
চারা রোপনের উপযুক্ত সময় | অক্টোবর – ফেব্রুয়ারি। |
বংশবৃদ্ধি | বীজ, কাটিং, গুটি কলম, ও চোখ কলম। |
বাংলাদেশের জন্য চাষ উপযোগী গোলাপের জাত – মিরান্ডি, পাপা মেলান্ড, ডাবল ডিলাইট, তাজমহল, প্যারাডাইস, ব্লু – মুন, মন্টেজুমা, টাটা সেন্টার, সিটি অফ বেলফাস্ট ইত্যাদি।
চারা উৎপাদনের পদ্ধতিঃ (Chara Utpadon Poddhoti)
সাধারণত বিভিন্ন কলমের মাধ্যমে গোলাপের বংশবিস্তার ঘটানো হয়। যেমনঃ কাটিং, গুটি কলম, চোখ কলম ইত্যাদি। বীজের মাধ্যমে ও গোলাপের বংশবিস্তার করা হয় তবে সেটা কেবল ফসল উন্নয়ন কার্যক্রমে ব্যাবহার করা হয়। বহুল ব্যবহৃত ও জনপ্রিয় পদ্ধতি হচ্ছে চোখ কলম বা বাডিং। গোলাপের যে জাতটি প্রজনন করা হবে তার চোখ অপর একটি আদিজোড়ের উপর স্থাপন করা হয়।
আদিজোড়কে একটু সহজভাবে ভেঙ্গে বলি, গোলাপের নতুন জাত তৈরির জন্য প্রথমে যেকোনো জাতের ডাল পেন্সিল সাইজ আকারে কেটে ২৫ – ৩০ সে. মি. দূরত্বে রেখে নার্সারিতে সারি করে লাগানো হয় যাকে আদিজোড় বলে। অতঃপর ৬ মাস পর কাটিংস গুলো বাডিং এর জন্য উপযুক্ত হয়। গোলাপের জন্য সাধারণত T বাডিং করা হয়ে থাকে।
টবে গোলাপ চাষের পদ্ধতি (Tobe Golap Chaser Poddhoti)
আমরা অনেকেই বাসা বাড়িতে শখের জন্য টবে গোলাপ গাছ লাগানোর ইচ্ছা পোষণ করে থাকি। আপনি যদি একজন গোলাপ প্রেমী হয়ে থাকেন তবে নিম্নের ধাপগুলো অনুসরণ করে আপনার গোলাপ গাছের যত্ন নিতে পারেন। গোলাপের পরিচর্যা না করলে ভালোমানের ফুল পাওয়া সম্ভব হয়না বললেই চলে।
টব রাখার জায়গা নির্বাচন (Tob Rakhar Jayga Nirbachon)
টবে গোলাপ চাষের জন্য প্রথমে আপনাকে টবগুলো রাখার সঠিক জায়গা নির্বাচন করতে হবে। টবগুলো রাখার জন্য এমন জায়গা নির্বাচন করবেন, যেখানে সকালের সূর্যের আলো পায় এবং দিনে কমপক্ষে ৬-৮ ঘন্টা সূর্যের আলো পাবে।
টবের আকার নির্ধারণ (Tober Akar Nirdharon)
জায়গা নির্বাচনের পর আপনাকে টবের আকার নির্ধারণ করতে হবে। গোলাপের জাতের উপর ভিত্তি করে টব সিলেকশন করতে পারেন। ছোট জাতের জন্য ২০ সেঃ মিঃ বা ৮ ইঞ্চি এবং বড় জাতের জন্য ৩০ সেঃ মিঃ বা ১২ ইঞ্চি অথবা তারথেকেও বড় সাইজের টব ব্যবহার করতে পারেন।
চারা সংগ্রহ (Chara Songroh)
জায়গা ও টবের সাইজ নির্ধারণের পর আপনার নির্ধারিত জাতের চারা সংগ্রহ করতে হবে এবং সময়মতো সেগুলিকে টবে বসাতে হবে। চারা সংগ্রহের ক্ষেত্রে বিশ্বস্ত নার্সারি বেছে নিতে পারেন। আমাদের নিকট থেকেও আপনি চারাগাছ সংগ্রহ করে দেখতে পারেন। আমাদের ফুলের চারাগাছ কালেকশন গুলো দেখুন। চারা যেখান থেকেই সংগ্রহ করেন না কেন, খেয়াল রাখবেন চারার গোড়ার মাটির গোল্লাটি অবিকল আছে কিনা।
টবে চারা বসানো (Tobe Chara Bosano)
চারা সংগ্রহের পর সেগুলোকে নির্দিষ্ট সময়ে টবে বসাতে হবে। বছরের যেকোনো সময়েই আপনি টবে চারা বসাতে পারেন, তবে সেপ্টেম্বর – অক্টবর এবং জানুয়ারি – ফেব্রুয়ারিকে উত্তম সময় হিসেবে বিবেচনা করা হয়। চারা বসানোর ক্ষেত্রে কিছু বিষয় লক্ষ্য রাখতে হবে, যেমনঃ চারা গুলো যদি টবে থাকে তবে চারাটিকে টবের সম্পূর্ণ মাটিসহ এমন ভাবে আলাদা করতে হবে যেন চারাগাছ থেকে কোনো মাটি আলগা না হয়ে যায়। আর যদি সংগ্রহকৃত চারাগুলোর গোড়া ভেজা মাটি দ্বারা আবৃত থাকে তবে সেগুলোকে একটু শুকিয়ে নিতে হবে। চারা টবে বসানোর পূর্বে চারাগাছের মরাপাতা, ডালপালা থাকলে সেগুলো ছেঁটে নেওয়া ভালো।
পানি সেচ (Pani Sech)
চারা বসানোর পর কমপক্ষে ২-৩ বার পানি সেচ দিতে হবে। পানি সেচের সময় খেয়াল রাখতে হবে যেন চারা গাছের গোড়ায় পানি না জমে। জানেনইতো জমে থাকা জলে ডেঙ্গু মশা ডিম্ পাড়ে। চারাগুলোকে প্রথম অবস্থায় ৩/৪ ঘন্টা সূর্যের আলোতে রাখা ভালো এবং ধীরে ধীরে সেটা ৬-৮ ঘন্টা পর্যন্ত বাড়ানো যেতে পারে। গাছগুলোতে যখন কুঁড়ি আসবে তখন সকাল সন্ধ্যা দুবেলা ঝর্ণার মতো সেচ পাম্প দিয়ে পুরো গাছটিকে ভিজিয়ে দিলে অধিক ফুল পাওয়া যায়।
সার প্রয়োগ (Sar Proyog)
অতঃপর চারা বসানোর ১ মাস পর থেকে ১৫ দিন বা ১ মাস পর পর সার প্রয়োগ করতে হয়। সার প্রয়োগের নিয়ম নিম্নে পয়েন্ট আকারে দেওয়া হলো
১. ইউরিয়া, ডাই – এমোনিয়াম সালফেট ও ডাই পটাশিয়াম ফসফেট প্রতিটি ১০ গ্রাম করে ১০ লিটার পানিতে গুলে স্প্রে দ্রবণ তৈরী করা হয়।
২. ম্যাগনেসিয়াম সালফেট ২০ গ্রাম, ম্যাঙ্গানিজ সালফেট ১৫ গ্রাম, ফেরাস সালফেট ১০ গ্রাম বোরাক্স ৫ গ্রাম হারে মিশিয়ে প্রতি লিটার পানিতে উল্লেখিত মিশ্রণটির ২ গ্রাম করে গুলিয়ে স্প্রে করা হয়।
দুটি সারের সাথেই কীটনাশক মিশিয়ে স্প্রে করা যাবে কিন্তু একটি অপরটির সাথে মিশিয়ে স্প্রে করা যাবেনা।
গাছ ছাঁটাই (Gachh Chhantai)
গাছের ফুল দেওয়া শেষ হলে গাছগুলোকে কেটে ছাঁটাই করা উচিৎ। সাধারণত অক্টবর – নভেম্বর মাসে ৮-১০ ইঞ্চি পর্যন্ত বড় রেখে ডালগুলোকে ছাঁটাই করা হয়ে থাকে। ছাঁটাইয়ের পর ডাইব্যাক নামক রোগের সংক্রমণ দেখা যেতে পারে। তাই ছাঁটাইয়ের আগে ও পরে কীটনাশক ও ছত্রাকনাশক ঔষধ প্রয়োগ করা ভালো।
পোকামাকড় দমন (Pokamakorh Domon)
পোকামাকড় হতে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। পোকা দেখামাত্র সেগুলোকে মেরে ফেলতে হবে বা সেটা দূর করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে গাছের গোড়ায় কখনোই যেন পানি না জমে। জমিতে গোলাপ চাষ পয়েন্টে বিভিন্ন পোকামাকড় দমনের একটি চার্ট দেওয়া হয়েছে।
গ্রীষ্মকালে গোলাপ গাছের পরিচর্যা (Grishmokale Golap Gachher Porichorja)
গ্রীষ্মকালে তাপমাত্রা অধিক থাকায় বেশি পরিমান সূর্যের আলো পেলে গোলাপ গাছগুলোর ক্ষতি হতে পারে। এজন্য আপনার টবগুলোকে এমনস্থানে রাখবেন যেখানে সূর্যের তাপ কোনো ক্ষতি করতে পারবেনা। টবগুলো রাখার স্থানে খড় বা এ জাতীয় কিছু বিছানোর পর ইট অথবা কাঠের টুকরোর উপর টবগুলো রাখলে বেশি ভালো হবে।
গরমের দিনে প্রচন্ড খরা বা দুপুর বেলা কখনোই গাছে পানি দিবেন না। রাত ৭-৮ টার পর তাপমাত্রা যখন কমে যায় তখন টবগুলোতে পানি দিবেন। গ্রীষ্মকালে গাছে পানি দেয়ার এটাই উপযুক্ত সময়।
বর্ষাকালে গোলাপ গাছের যত্ন (Borshakale Golap Gachher Jotno)
বর্ষাকালে টবগুলোকে ছাদে বা অন্য যেখানেই রাখুন না কেন টবের নিচে থাকা খড়, কাঠের টুকরো, ইটের টুকরো ইত্যাদি সরিয়ে ফেলে দিতে হবে এবং ঝড় থেকে গাছকে রক্ষার প্রস্তুতি নিতে হবে। গাছের গোড়ায় যাতে পানি না জমে সেজন্য টবে অতিরিক্ত মাটি দিয়ে ত্রিভুজের মতো উঁচু করে দিলে পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হবেনা। তবে বর্ষা শেষে টব থেকে অতিরিক্ত মাটি সরিয়ে ফেলাই ভালো।
প্রদর্শনী করতে চাইলে যে বিষয় গুলোর প্রতি লক্ষ্য রাখা প্রয়োজন :
আপনি যদি বিভিন্ন প্রদর্শনীতে আপনার গোলাপগুলো প্রদর্শন করতে চান তবে উন্নত জাতের গোলাপ গাছ বাছাই করে টবে লাগাবেন। কারণ প্রদর্শনীগুলো ম্যাক্সিমাম বর্ষার সময়েই হয়ে থাকে।
প্রদর্শনীর জন্য এ সময় গাছগুলোর আলাদাভাবে যত্ন নেওয়া প্রয়োজন। সঠিক নিয়মে সময় মতো সেচ ও সার প্রয়োগ করে গাছগুলোকে সজীব ও স্বাস্থ্যবান রাখতে হবে যাতে ফুলগুলো বড়ো সাইজের হয়। শুধু সেচ ও সার নয় গাছগুলোর প্রতি প্রথম থেকেই যত্নবান হতে হবে, প্রদর্শনী শুরুর কমপক্ষে ২ থেকে ৩ মাস আগে গাছগুলোকে ছাটাই দিয়ে রাখতে হবে এবং মাঝে মাঝে কিছু ডাল ও ছেঁটে দিতে হবে যাতে গাছগুলো বেশ ঝাঁপালো হয়। বড়ো ফুলের লক্ষ্যে প্রতিটি শাখায় মাত্র ২টি কুঁড়ি রেখে বাকি গুলো কেটে ফেলা উচিৎ। এমনকি যদি নির্দিষ্ট সময়ের আগেই গাছে কুঁড়ি আসে সেগুলোকেও কেটে ফেলতে হবে।
সর্বশেষ প্রদর্শনীর পূর্বে ফুলের উজ্জ্বলতা বাড়িয়ে নিতে হবে, যার জন্য ৮ লিটার পানিতে ৫০ গ্রাম হারে আয়রন সালফেট গুলিয়ে ফুলে প্রয়োগ করতে হবে. এবং ৭ দিন আগে থেকেই টবগুলোকে ছায়াযুক্ত স্থানে রাখতে হবে। অন্যথায় ফুলগুলোর পাঁপড়ি রৌদ্রে নষ্ট হয়ে যাবে।
জমিতে গোলাপ চাষ এর পদ্ধতি (Jomite Golap Chasher Poddhoti)
জমি প্রস্তুতকরণঃ
ছোট বাগানের জন্য গাছ রোপণের অন্তত ৩ সপ্তাহ আগে বেড তৈরি করলেই চলে। আবহাওয়া শুকনো থাকলে বেড তৈরীর পর পানি দিয়ে ভিজিয়ে দিলে খৈল ও জৈব সার পচে যাবে এবং বেড গাছ লাগানোর উপযোগী হবে।
বেড তৈরির পর চারা রোপণের জন্য বিভিন্ন জাতের জন্য বিভিন্ন দূরত্বে গর্ত করতে হয়, যেমন- ডোয়ার্ফ পলিয়েন্থা ০.৫ মিটার, ফ্লোরিবান্ডা ও চায়না ০.৬৫ মিটার, হাইব্রিড টি ১ মিটার, হাইব্রিড পারপেচুয়েল, মন ও দামাস্ক ও টি ১.৫০ মিটার, নয়সেট-২.০ মিটার ও লতা গোলাপ ২.৫০ মিটার।
বিভিন্ন জাতের গাছ সারিতে লাগাতে হয়, এতে সার প্রয়োগ, পানি সেচ ও অন্যান্য পরিচর্যার কাজের সুবিধা হয়। রোপণের জন্য ১ মিটার গভীর ও ০.৬৫ মিটার ব্যাস বিশিষ্ট গোলাকার গর্ত করতে হয়। গর্ত করার সময় উপরের ২০-২২ সেঃমিঃ মাটি আলগা করে রেখে বাকী মাটির সাথে মাটির পরিমানের এক তৃতীয়াংশ সমান পচা গোবর, আধা কেজি গুঁড়ো খৈল, ১৮ কেজি টি.এস.পি ভালভাবে মিশিয়ে দিয়ে গর্তটি ভরাট করতে হবে। তারপর আলাদা করে রাখা মাটির সাথে কম্পোস্ট, সবুজ সার ইত্যাদি জৈব সার মিশিয়ে গর্তে দিতে হবে এবং দেখতে হবে যাতে গর্তের স্থান পাশের জমি থেকে উঁচু হয়।
যদি বেড তৈরি দু’একদিনের মধ্যে গাছ লাগানো প্রয়োজন হয়, তাহলে কম্পোস্ট বা পচা গোবর সার বেশি করে দিয়ে গাছ লাগানো উচিত। গাছ লেগে যাবার পর খৈল ও রাসায়নিক সার ব্যবহার করতে হবে। গোবর সার বেশি ব্যবহার করলে ইউরিয়া সার না দিলেও চলবে। এ ক্ষেত্রে খৈল ৪/৫ দিন ভিজিয়ে জলের সাথে মিশিয়ে গোড়ার চারপাশে দিয়ে ৩/৪ দিন হালকা করে মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে।
চারা রোপনঃ
গোলাপের শিকড়ে যদি শক্ত মাটি থাকে, তাহলে গাছ লাগানোর আগে পানি দিয়ে ভিজিয়ে মাটি নরম করে নিতে হয় যাতে শিকড় ঠিকমত বাড়তে পারে।
যেসব চারার গোড়ায় মাটি থাকে না, সেসব চারা মাটিতে লাগানোর আগে ২/৩ ঘন্টা পানি ভিজিয়ে তারপর লাগাতে হয়।
পুরানো গাছ জায়গা বদল করে লাগাতে হলে প্রথমত কচি ডগা, মরা ডাল ইত্যাদি ধারালো ছুরি বা সিকেচার দিয়ে ভাল করে ছেঁটে নিতে হয়। তারপর শিকড়ের চারপাশে বেশ জায়গা নিয়ে খুঁড়ে গাছটিকে এমন ভাবে উঠাতে হবে যাতে খুব কম সংখ্যক শিকড় কাটে। গাছটিকে একই পদ্ধতিতে গর্তে লাগিয়ে প্রচুর পানি দিতে হবে এবং অন্তত ২/৩ দিন ছায়া দিতে হবে। শুকনো মৌসুমে গরমের দিনে পুরানো গাছের জায়গা বদল না করাই ভাল।
সার প্রয়োগঃ
ছাঁটাইয়ের আগে প্রতি ২/৩ কেজি শুকনো গোবর সার, ৫০ গ্রাম টি.এস.পি ও ৫০ গ্রাম পটাশ প্রয়োগ করতে হবে। বেডের উপরের ১০ সেঃমিঃ পরিমাণ মাটি সরিয়ে নিচের মাটি কিছুটা আলগা করে সার গুলো মাটির সাথে সাবধানে মিশিয়ে দিতে হবে যেন শিকড়ের কোন ক্ষতি না হয়। গোলাপের জন্য হাঁস-মুরগি বা কবুতরের বিষ্ঠা উত্তম সার।
সার পানি দিয়ে গুলে ব্যবহার করলে ভেজা মাটিতে দিতে হয়। রাসায়নিক সার গাছ খুব তাড়াতাড়ি গ্রহন করে। শুকনো মাটিতে তরল সার দিলে অতিরিক্ত কড়া হবার দরুন গাছের ক্ষতি হতে পারে। তাই তরল সার দিতে হবে মাটি ভেজা অবস্থায়। তরল সার দেবার পর পানি সেচ দিতে হয়। অনেক সময় দেখা যায় মাটিতে পর্যাপ্ত সার থাকা সত্ত্বেও ছাঁটাইয়ের পর গাছের পাতা সতেজ হচ্ছে না বা গাছ ঠিকমত বাড়ছে না। এ ক্ষেত্রে পাতার মাধ্যমে সার প্রয়োগ করে ভাল ফল পাওয়া যায়।
ডালপালা ছাঁটাইকরণ
সাধারনত তিন রকমের ছাঁটাই করা হয়, হালকা ছাঁটাই, মাঝারি ছাঁটাই ও কঠোর ছাঁটাই। লম্বা ডালের এক তৃতীয়াংশ কাটা বা মরা ও অসুস্থ ডাল কেটে ছেঁটে ফেলাকে হালকা ছাঁটাই, মাটির উপরে ৩০-৩৫ সেঃমিঃ রেখে ছাঁটাই করাকে মাঝারি ছাঁটাই ও মাটির উপরে ডালের উচ্চতা ১৪-২০ সেঃমিঃ রেখে ছাঁটাই করাকে শক্ত ছাটাই বলা হয়। কোন ধরনের ছাঁটাই হবে তা নির্ভর করে পারিপার্শ্বিকতা, গাছ ও মাটির রকম ভেদের উপর। বালি প্রধান মাটিতে ক্রমাগত কঠোর ছাঁটাই করলে গাছ মারা যেতে পারে। তবে মাটি যদি ভাল হয় এবং প্রদর্শনীর জন্য বড় ফুল ফোটাতে হয় তাহলে কঠোর ছাঁটাই প্রযোজ্য। অন্য ক্ষেত্রে মাঝারি ছাঁটাই করতে হয়। মাঝারি ছাঁটাইয়ের ফুল খুব বড় হয় না বটে, তবে বেশী ফুল পাওয়া যায়। ছাঁটাইয়ের পর কাটা অংশে ‘প্রুনিং পেইন্ট’ লাগাতে হবে, নতুবা কাটা অংশ দিয়ে পোকার আক্রমন ও তৎপরে ছত্রাকের আক্রমন ঘটতে পারে। দেশীয় গোলাপে কাটা স্থানে অবশ্য গোবর লাগানোই উত্তম। প্রুনিং পেইন্ট তৈরির ফরমূলাঃ পাইরিফস বা পাইরিবান ১ ভাগ, কপার কার্বনেট ৪ ভাগ, লাল লেড ৪ ভাগ এবং তিষির তেল ৫ ভাগ।
গোলাপ গাছের পোকা-মাকড় দমনঃ (Poka-Makorh Domon)
যেসমস্ত পোকামাকড় গুলো গোলাপ গাছগুলোকে আক্রমণ করে থাকে তাদের চেনার উপায় ও দূর করার পদ্ধতি নিম্নে চার্টের মাধ্যমে দেখানো হয়েছে।
পোকামাকড় | চিহ্নিত করণ | প্রতিকার |
---|---|---|
উইপোকা | কাটিং এর শিকড় নষ্ট হলে। | উইপোকার ধরার সম্ভাবনা পূর্বে থেকে বুঝতে পারলে কাটিং লাগানোর পূর্বেই পাইরিফস বা উইপোকা নিধক অন্য যেকোনো কীটনাশক ব্যবহার করে মাটি শোধন করে নেওয়া উচিত। |
লাল ক্ষুদে মাকড়সা | এ পোকা পাতার নিচের পিঠে থেকে পাতার রস চুষে খায় বলে গাছ নিস্তেজ হয়ে পড়ে। পাতর উপরের পিঠে পিন ফোটানো দাগ এবং আক্রান্ত পাতা ও ডালে সুক্ষ্ম জাল দেখা গেলে এদের আক্রমণ সনাক্ত করা যায়। আক্রমণ বেশী হলে সবুজ রং হালকা হয়ে যায় এবং পাতা কুঁকড়িয়ে যায়। অনেক সময় গাছ মারাও যায়। | সংখ্যায় কম থাকতেই লাল খুদে মাকড়সা দমন করতে হয়, নতুবা পরে নিয়ন্ত্রনের বাইরে চলে যায়। কেলথেন-৪২, থিওভিট-৮০, ইথিওন-৪৬.৫ ইসি প্রভৃতি কীটনাশকের যে কোন একটি পানির সংগে নির্দিষ্ট পরিমাণ মিশিয়ে পাতার উল্টো পিঠে স্প্রে করে এদের দমন করতে হয়। শুধুমাত্র ঠান্ডা পানি জোরে সেপ্র করেও এদের দমন করা যায়। |
শ্যাফার বিটল | এ পোকা বড় ও লালচে রং এর। রাতের বেলা গাছের পাতা খেয়ে ঝাঁঝরা করে দেয়, ফুলের পাপড়ি ও রেনু খায় এবং চারা গাছের বৃদ্ধিতে বিশেষ ক্ষতি করে। বর্ষাকালেই এ পোকার আক্রমন বেশী হয়। এ পোকা মাটিতে ডিম পাড়ে এবং ক্রীড়া গোলাপের শিকড় খেয়ে ক্ষতি করে। | পাইরিফস, পাইরিবান বা উপযুক্ত কীটনাশক দিয়ে কীটনাশক দিয়ে মাটি শোধন করলে কীড়া মারা যায়। রাতের বেলা হাতে বেছে পোকা ধরে মেরেও এ পোকা দমন করা যায়। |
শুঁয়ো পোকা | এরা গাছের পাতা খেয়ে ক্ষতি করে। | পোকা অল্প ও বড় আকারের হলে ধরে মেরে ফেলা সহজ। কিন্তু আকারে ছোট ও সংখ্যায় বেশি হলে রিপকর্ড ১০ ইসি প্রতি লিটার পানিতে ১.১ মিলি বা যেকোন স্পর্শ বিষ স্প্রে করতে হয়। একবারে দমন না হলে ২/৩ দিন পর আবার স্প্রে করার সময় আশে পাশের গাছ ও ঘাসে স্প্রে করতে হয়। |
ডিগার বোলতা | ছাঁটাইয়ের পর অনেক সময় এরা ডালের কাটা অংশ দিয়ে সুড়ঙ্গ খুঁড়ে ভিতরে গিয়ে বাসা বাঁধে। এই ক্ষত দিয়ে গাছ ছত্রাক দ্বারা আক্রান্ত হয় এবং পরে ডাইব্যাক রোগের লক্ষণ দেখা দেয়। | ডাল ছাঁটাইয়ের পর কাঁটা অংশে প্রুনিং পেইন্ট লাগিয়ে এ পোকা প্রতিরোধ করা যায়। |
স্কেলপোকা | গাছের পুরানো ডালের ছালের উপর অনেক সময় বাদামী রং এর স্কেল পোকার আক্রমন হয়। এদের উপর শক্ত স্কেল বা আঁশ থাকে। এ পোকার ক্রীড়া নতুন স্থায়ীভাবে বসে রস চুষে খেয়ে গাছকে নিস্তেজ করে দেয়। | চৈত্রের দিকে যখন ক্রীড়া দেখা দেয় তখন এবং ছাঁটাইয়ের পর কীটনাশক স্প্রে করলে এ পোকা দমন হয়। গাছের সংখ্যা কম হলে মেথিলেটেড স্পিরিটে ব্রাশ ডুবিয়ে আক্রান্ত ডাল ঘষে দিলে পোকা উঠে যায়। আক্রান্ত ডাল ছাঁটাই করে পুড়িয়ে দিলেও এ পোকার বিস্তার কমে। |
থ্রিপস | মার্চ হতে এপ্রিল পর্যন্ত গরম ও শুষ্ক আবহাওয়ায় থ্রিপসের আক্রমণ হয়। এরা ঝাঁক ধরে এসে আক্রমণ করে এবং অল্প সময়েই ফুলের কুঁড়ি ও অপরিণত ডগার রস চুষে খেয়ে গাছের বিশেষ ক্ষতি করে। ফলে ফুর কুঁচকানো অবস্থায় ফোটে বা ফুটতেই পারে না। কচি ডগার পাতা কুঁকড়ে যায়। আক্রান্ত ডগা ও ফুল পরীক্ষা করলে পরিণত ও অপরিণত থ্রিপস দেখা যায়। | আক্রান্ত ডগা এবং ফুল কেটে পুড়িয়ে ফেলে এবং মিপসিন ৭৫ ডব্লিউপি নামক কীটনাশক প্রতি লিটার পানিতে ২.০ গ্রাম হারে পানিতে মিশিয়ে সপ্তাহে একবার করে ২/৩ বার পরে দু সপ্তাহ পর একবার করে নিয়মিত স্প্রে করতে হয়। |
জাব পোকা | জাব পোকা জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসে পাতা, কচি ডগা ও ফুলের রস চুষে খেয়ে ক্ষতি করে। | এ পোকা দমনের জন্য ২মিলি লিটার ম্যালাথিয়ন প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে ৭-১০ দিন অন্তর স্প্রে করতে হবে। |
রোগঃ
পোকামাকড় ছাড়াও গোলাপ গাছে আরো কিছু রোগ দেখা যায় যা হয়ে থাকে মূলত ছত্রাক জনিত ও খাদ্যের অভাবজনিত কারণে। নিম্নে এসমস্ত রোগ ও প্রতিকারের একটি চার্ট তৈরী করা হয়েছে।
রোগ | চিহ্নিত করণ | প্রতিকার |
---|---|---|
ডাইব্যাক | রোগাক্রান্ত গাছের ডাল বা কান্ড মাথা থেকে কালো হয়ে মরতে শুরু করে। এ লক্ষণ ক্রমেই কান্ডের মধ্য দিয়ে শিকড় পর্যন্ত পৌঁছে এবং সম্পূর্ণ গাছ মারা যায়। | ডাইব্যাক শুরু হলে রোগাক্রান্ত বেশ নিচ পর্যন্ত কেটে ফেলে দিয়ে কাটা মাথায় প্রুনিং পেইন্ট লাগিয়ে দিতে হয়, আক্রান্ত অংশ কেটে পুড়িয়ে দিতে হয় এবং যে সিকেটিয়ার বা ছুরি দিয়ে আক্রান্ত গাছ কাটা হয় তা স্পিরিট দিয়ে মুচে দিয়ে অন্য গাছ কাটতে হয়। |
পাউডারী মিলডিউ | শীতের শেষের দিকে পাতায় সাদা সাদা পাওডারের মত দেখা যায়। এগুলো ছত্রাকের অনুজীব। রোগ বেশী হলে আক্রান্ত গাছের কচি পাতা ও ডগা এসব অনুজীব দ্বারা একেবারে ঢেকে যায়। কুঁড়ি ফোটে না, নষ্ট হয়ে যায়। | রোগাক্রান্ত ডগা ও পাতা তুলে পুড়িয়ে দিতে হবে এবং হেকোনাজল ৫ ইসি বা ডাইথেন এম-৪৫ অথবা ইন্ডোফিল এম-৪৫ দিয়ে স্প্রে করতে হবে। |
ফুল সংগ্রহ ও ব্যবস্থাপনাঃ
- আপনি যদি ফুল কাটার পর পরই সেটা ব্যবহার করতে চান তবে অর্ধ ফোটা গোলাপ সংগ্রহ করা ভালো হবে। আর যদি কিছুদিন পর ব্যবহার করতে চান তবে ফুলের কুঁড়ি পর্যায়ে যেগুলো থাকবে ওগুলো সংগ্রহ করলে বেশি ভালো হবে।
- ফুল সংগ্রহের জন্য ধারালো ছুরি দিয়ে কয়েকটি পাতাসহ ফুলের দন্ডটি কাটা উচিৎ।
- ফুল কাটার উপযুক্ত সময় হচ্ছে সকাল অথবা পড়ন্ত বিকেল।
- ফুল সংগ্রহের পর এটিকে ফুলদানিতে রাখতে পারেন। ফুলদানির পানিতে যদি ৩% চিনি ও ৬০০ PPM ৮ HQC দ্রবণ রাখেন তবে ফুলগুলোকে দীর্ঘদিন সতেজ রাখা সম্ভব।
- বাজারজাত করার লক্ষ্যে বিভিন্ন রকম ফুলের প্যাকেজ করা হয়ে থাকে। তবে অনেক ক্ষেত্রে স্থানীয় বাজারে প্যাকেজিং ছাড়াও ফুলের গোছা বিক্রয় করা হয়ে থাকে। প্যাকেজিং এর জন্য অনেক জায়গায় খবরের কাগজের ব্যাবহারও লক্ষ্য করা যায়।
ফলনঃ
আবহাওয়া ও জাতের উপর নির্ভরকরে গোলাপের ফলন হয়ে থাকে। উপযুক্ত পরিবেশে লম্বা কান্ডযুক্ত জাতটির প্রত্যেকটিতে ৩০ – ৫০ টি করে ফুল হয়ে থাকে। গরমের সময় যখন গাছের ফলন কমে যায় তখন গাছের বৃদ্ধির জন্য ডালপালা ছেঁটে দেওয়া উচিৎ।
গোলাপ ফুলের ছবি (Golap Fuler Chhobi)
গোলাপ অসম্ভব সুন্দর একটি ফুল। গোলাপ অনেক রঙের ও বিভিন্ন জাতের হয়ে থাকে। এখানে কেবলমাত্র জনপ্রিয় কিছু রঙের গোলাপের ছবি তুলে ধরা হলো।
লাল গোলাপ ফুল – Red Rose
হলুদ গোলাপ ফুলের ছবি – Yellow Rose
সাদা গোলাপ ফুল – White Rose
কালো গোলাপ – Black Rose
নীল গোলাপ ফুলের ছবি – Blue Rose
সবুজ গোলাপ – Green Rose
গোলাপি রঙের গোলাপ – Pink Rose
কমলা রঙের গোলাপ – Orange Rose
তাজা গোলাপ ফুল
হাজারী গোলাপ ফুল – Hajari Golap
আরো অনেক অনেক সুন্দর ও সব ধরণের বা জাতের , বিভিন্ন রঙের বাছাইকৃত গোলাপ ফুলের ছবি ডাউনলোড করুন।
উপসংহারঃ
পোস্টটিতে গোলাপ সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরার পাশাপাশি চমৎকার এবং চোখ ধাঁধানো কিছু গোলাপ ফুলের ছবি যুক্ত করা হয়েছে। আমরা আশাবাদী পোস্টটি আপনাদের উপকারে আসবে। পোস্টটি যদি আপনাদের নিকট কিছুটা হলেও প্রয়োজনীয় মনে হয় তবে বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়াতে আপনার পরিবার ও বন্ধু বান্ধবের সাথে শেয়ার করুন। পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমাদের পোস্টগুলো নিয়মিত পড়তে সাবস্ক্রাইব অপশনে আপনার ইমেইল দিয়ে সাবস্ক্রাইব করে রাখতে পারেন।